বর্জ্য দূষনে বিলুপ্ত প্রায় সাহেবখালী খালটি - মানবাধিকার বার্তা

Breaking

Breaking News

Comments

বৃহস্পতিবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২২

বর্জ্য দূষনে বিলুপ্ত প্রায় সাহেবখালী খালটি

নিজস্ব প্রতিবেদক( দোহার ) বর্জ্য দূষনে বিলুপ্ত প্রায় সাহেবখালী খালটিছবি-দেশের খবর ঢাকার দোহার ঐতিয্যবাহী জয়পাড়া বাজারের খালের প্রায় দুই কিলোমিটার সাহেব খালী খালটি বর্জ্য ও ময়লা ফেলে দূষিত করে দখলে নিয়েছেন প্রভাবশালীরা। ফলে উপজেলায় পদ্মা নদীর শাখা খালটি সরু নালায় পরিনত হয়েছে। স্থানীয়দের সাথে আলাপকালে তারা জানান,প্রায় পঞ্চাশ মিটারের বেশী প্রশস্থ খালটি লটাখোলা থেকে সাহেব বাজার পর্যন্ত দখল ও দূষনের কারনে ধুঁকে ধুঁকে সরু নালায় পরিনত হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন ও পৌরসভা কতৃপক্ষের অবহেলা ও দায়িত্ব একে অপরের উপর চাপিয়ে ধ্বংস করা হচ্ছে দোহারের প্রানকেন্দ্র জয়পাড়া বাজারের মাঝখান দিয়ে প্রবাহিত পদ্মা নদীর শাখা খালকে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জয়পাড়া বাজারসহ আশপাশের এলাকার যত ময়লা আবর্জনার স্তুপ-পলিথিন ভাগাড়েঁ পরিনত হয়েছে।এই খালে উপজেলা ও পৌরসভার এরিয়ার ক্লিনিক-বাজার ময়লা, কশাইখানার পশুর উৎসৃষ্ট ময়লা ফেলে ময়লার ভাগাড়েঁ পরিনত হয়েছে।অপরদিকে এই পথ দিয়ে চলাচলকারীরা দূর্গন্ধে দূর্ভোগ পোহাচ্ছে। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুকরা জানান,বর্ষার সময়ে স্রোত থাকে খালে।আর শুকনো মৌসুমে খাল শুকিয়ে হয়ে দাড়ায় ময়লা-আবর্জনার ভাগাড়ঁ। অপরদিকে দোহার উপজেলার প্রাণকেন্দ্র জয়পাড়া কলেজের পিছনে দিয়ে বয়ে যাওয়া শাখা খালেও ফেলা হচ্ছে বর্জ্য। একই চিত্র উপজেলার চৌধুরী পাড়া ব্রিজের নিচে খালের পানিতে আশেপাশে বাড়ি থেকে ফেলা হচ্ছে আবর্জনা ও বর্জ্য। এখানেও খালটির অনেক জায়গায় বর্জ্য ফেলার কারণে পানি চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়ে দূগন্ধ ছড়িয়ে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে।উপজেলা প্রশাসন ও পৌরসভা কঠোর পদক্ষেপ না নেওয়ার কারণে দ‚ষণের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে না শাখা খালটি বলে অভিযোগ স্থানীয় সুশীল সমাজের। অনতিবিলম্বে কর্তৃপক্ষের নজরদারি বাড়াতে প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছেন তারা।
চৌধুরী পাড়া এলাকায় মসজিদে মুসল্লিরা বলেন, এইখালে জনগণ যেভাবে ময়লা ফেলতেছে তাতে এখন আমাদের মসজিদে এসে ময়লার গন্ধে নামাজ পড়া কষ্ট হচ্ছে।দুর-দুরান্ত থেকে মাঝে মাঝে বাইক নিয়ে এসে এক পোলটা ময়লা এনে এখানে ফেলে চম্পট দেয়। আমরা না করলেও কেউ শুনছেন না। মুসুল্লিরা আরও বলেন, আমরা দশ বছর আগে দেখেছি এই খাল দিয়ে বড় বড় নৌকা ও মালামাল বহনকারী বোট চলতো কিন্তু এখন এখান পানিও প্রবাহিত হয় না। বিষয়টি নিয়ে এরআগে বেশ কয়েকটি জাতীয় সংবাদ মাধ্যমে সংবাদ প্রচার হলে ঢাকা-১ আসনের সংসদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারী শিল্প এবং বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্ঠা সালমান এফ রহমান পৌরসভা ও উপজেলা কতৃপক্ষকে দিক-নির্দেশনা দিলেও তা যথাযথ মানছেন না স্থানীয়রা। বিষয়টিতে বলা ছিল ময়লা ও আবর্জনা যেন কোন অবস্থাতেই খালে না ফেলা হয়।পৌরবাসীর জন্য নির্ধারিত ৫০ টাকা কর আরোপ করে ময়লা পৌরসভা ও উপজেলা প্রশাসন নির্দিষ্ট স্থানে ফেলবে। আর আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় অভিযান চালাতে নির্দেশ দিয়েছিলেন।তার এই নির্দশনার পরপরই পৌরসভা কতৃপক্ষ মাইকিং করে প্রচার-প্রচারনা করে।এরপর আর প্রদক্ষেপ নেন নি কতৃপক্ষ। স্থানীয়দের সহযোগীতা ও প্রশাসনের নজরদারীই পারে মৃতপ্রায় ঐতিয্যবাহী খালটিকে বাচাঁতে। তা না হলে অচিরেই এই মৃত খালে পরিনত হয়ে দোহারের মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে পদ্মা নদীর শাখা খালটি। এ বিষয়ে জয়পাড়া বাজারের কামার নন্দোনাল বলেন, আমারা এখনে কাজ করি দায় ঠেকেঁ। এখানকার মানুষেরা খালের পাড়ে ময়লা ফালাইতে ফালাইতে দুইপাড়ের প্রায় ১০/১৫ হাত ভরে ফেলেছে এবং সেই জায়গায় স্থাপনা নির্মান করে দখলে নিয়েছেন। কারা এমন দখল করছেন এমন প্রশ্নের উত্তরে বলেন,পৌরসভার বাসিন্দারা জয়পাড়া বাজারের এসে ভোরে ময়লা ফেলে যায়।আমরা বারন করলেও তারা তা শুনছেন না। সাহেবখালি খালের এই করুন অবস্থা নিয়ে কসাই পট্টির সবুজের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমাদের এখানে জয়পাড়া বাজারে ময়লা ফেলানো হয়। কারা ফেলে সেই বিষয় জানতে চাই তিনি কিছু বলেনি। সাম্প্রপ্রতিক দোহার পৌরসভা কতৃপক্ষ দোহার-নবাবগঞ্জের নিকড়া-সাহেবখালী চকে লিজ নিয়ে সেখানে ড্রাম্পিং ব্যবস্থা করেছে। জয়পাড়া কলেজের অধ্যক্ষ সিদ্দিকুর রহমান বলেন, খালটি আমাদের কলেজের জায়গার পিছন দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বিগত কয়েক বছর আগে আমাদের কলেজের জায়গার সীমানা নিয়ে আমাদের প্রাক্তন ছাত্ররা খুটি গেড়ে দিয়ে আসে ছিল। কিন্তু কিছু দিন পর রাতের আধাঁরে সেই খুটি ফেলে দিলে এখন আবার দখলে ভরে গেছে।আমরা ইউএনও ও পৌরসভার কাছে চিঠি দিয়েছিলাম কিন্তু তারা কোন ব্যবস্থা নেয়নি। বর্তমানে ময়লা ও মাটি ফেলে স্থাপনা নির্মান করে খালটি দখল করে সুরু করে ফেলছে। এখন আমাদের দাবি প্রসাশনের কাছে যারা এই খালটি দখল করে রেখেছে তাদেরকে উচ্ছেদ করে খালটি রক্ষা করা। জয়পাড়া বাজার বনিক সমিতির দায়িত্ব থাকা সাধারন-সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন মাঝির সাথে আলাপকালে তিনি দখল ও দূষনের কথা স্বীকার করেন এবং এর প্রতিকারের জন্য প্রশাসনের সহযোগীতা চান বলে জানান। দোহার পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মশিউর রহমান বলেন, আমরা বর্তমানে নির্দিষ্ট স্থানেই ময়লা ফেলতেছি। পৌরসভার পরিচ্ছন্ন কর্মিরা পৌর এলাকার বর্জ্য প্রতিদিন ২ ট্রাক করে ময়লা ড্রাম্পিং স্টেশনে নিয়ে যাচ্ছে। দোহার উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মোবাশ্বের আলম বলেন, আমরা এই ময়লার বিষয় নিয়ে দোহার পৌরসভার সাথে শীঘ্রই বসে সমাধানের লক্ষ্যে চেষ্টা করবো।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Recent in Sports

Most Popular

Tags