৮ কিলোমিটার হেঁটে কলেজে যাওয়া সেই মেয়েটি সুযোগ পেলেন মেডিকেলে ভর্তির - মানবাধিকার বার্তা

Breaking

Breaking News

Comments

বৃহস্পতিবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২২

৮ কিলোমিটার হেঁটে কলেজে যাওয়া সেই মেয়েটি সুযোগ পেলেন মেডিকেলে ভর্তির

৮ কিলোমিটার হেঁটে কলেজে যেতেন, সুযোগ পেলেন মেডিকেলে ভর্তির সদ্য প্রকাশিত এমবিবিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন সাবনূর। সুযোগ পেয়েছেন জামালপুর শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজে ভর্তির। এতে আনন্দিত বাবা-মা শিক্ষকসহ পুরো এলাকাবাসী। তবে শঙ্কায় রয়েছে গেছে সাবনূরের ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন। সাবনূরের পরিবারের পক্ষে তার ভর্তি ও পড়াশোনার খরচ চালিয়ে যাওয়া কষ্টকর। সাবনূর পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার দক্ষিণ কামারকাঠির বাবুল মোল্লার মেয়ে। বাবুল মোল্লা পেশায় দিনমজুর। মা সাবিনা বেগম গৃহিণী। কামারকাঠি বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসিতে গোল্ডেন জিপিএ-৫ ও শহীদ স্মৃতি ডিগ্রী কলেজ থেকে এইচএসসিতে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়েছেন সাবনূর। জানা যায়, শহীদ স্মৃতি ডিগ্রী কলেজের শিক্ষক মাহমুদ সাবনূরের প্রাথমিক থেকে কলেজ পর্যন্ত রেজাল্ট দেখে তাকে এমবিবিএস পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার পরামর্শ দেন। এছাড়া অন্য বিষয়গুলোতেও সহায়তা করেন। এদিকে সাবনূর মেডিকেলে সুযোগ পেলেও অনেকেই বলছেন, সাবনূরের পড়াশোনার খরচ চালাবে কে? স্থানীয়দের দাবি, সাবনূরের পড়ার খরচ চালাতে কোনো বিত্তবান ব্যক্তি যদি এগিয়ে না আসে তাহলে ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন অধরাই থেকে যাবে তার। সাবনূরের বাবা জানান, আমার এক ছেলে ও ২ মেয়ে। আমি পেশায় দিনমজুর। এছাড়া পাঁচ বছর যাবত অ্যাজমা রোগে আক্রান্ত। আগের মতো কাজ করতে পারি না। একার আয়ে পরিবারের ভরণপোষণই অনেক কষ্টে হয়। ওদের লেখাপড়ার খরচ চালাতে গিয়ে ধার-দেনায় জর্জরিত। তিনি আরও জানান, সাবনূরের শিক্ষকরা তাকে নিয়ে গর্ব করতো, সে পড়াশোনায় ছোট থেকেই ভালো। ভালো প্রাইভেট টিউশনি দিতে পারিনি। বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সহযোগিতায় কলেজে ভর্তি করাই। কলেজের শিক্ষকদের বিস্তারিত বললে তারা মেয়েকে সহযোগিতা করেন। এককথায় স্কুল থেকে শুরু করে কলেজ পর্যন্ত শিক্ষক ও সহপাঠীরাই বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছে। সাবনূরের মা বলেন, সংসারে অভাবের কারণে অনেক সময় না খেয়ে কলেজ করেছে সাবনূর। এখনো সংসারে অভাব লেগেই আছে। ক্লাস সেভেনে থাকতে বাবা বিয়ে দেওয়ায় পড়ার ইচ্ছে থাকলেও পড়তে পারিনি। ছেলেমেয়েদের সেই সুযোগ দেওয়ার পণ করি। তিনি আরও জানান, অভাবের কারণে মানুষের বাসায় মাঝেমধ্যে কাজ করি। রাতে পাটি ও হাতপাখা বুনন করি। অভাবের কারণে তারা হেঁটেই কলেজে যায়। গাড়ি ভাড়া দিতে পারি না। সাবনূর প্রায় ৮ কিলোমিটার হেঁটে কলেজে যেতো আবার দুপুরে হেঁটে বাসায় ফিরত। এখন মেয়ের ভর্তি ও পড়ার খরচ কিভাবে চালাবো তা ভেবেই পাচ্ছি না। সাবনূর জানান, শিক্ষক সহপাঠীদের অনুপ্রেরণা ও সহযোগিতা পেয়েছি। আমি মেডিকেলে চান্স পেয়েছি। তবে এখন ভর্তির জন্য অনেকটা দুশ্চিন্তায় আছি। যদি মেডিকেলে ভর্তি হতে পারি ডাক্তার হয়ে আমি আমার দিনমজুর বাবা ও মায়ের মুখ উজ্জ্বল করব। এ জন্য আমি আমার শুভাকাঙ্ক্ষী সকলের কাছে দোয়া ও সাহায্য চাচ্ছি। এ ব্যাপারে নেছারাবাদ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোসারেফ হোসেন জানান, আমি তাদের আমার অফিসে আসতে বলেছি। সাবনূরের মেডিকেল ভর্তিতে যা খরচ হয় তা আমরা বহন করবো।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Recent in Sports

Most Popular

Tags