জেলা প্রতিনিধি :
চিনির দামে রেকর্ড, গরুর পথে দেশি মুরগি
ময়মনসিংহে তেল ও চিনির দাম অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়েছে। কাঁচা বাজারসহ মাছ ও মাংসের বাজার অস্থির। গরুর মাংসের দামের কাছাকাছি পৌঁছেছে দেশি মুরগির দাম।
ক্রেতারা বলছেন, রমজানকে কেন্দ্র করে অস্থির কাঁচা বাজার। আর বিক্রেতারা বলছেন, আমদানির উপর ভিত্তি করেই দাম কম-বেশির বিষয় জড়িত। এতে ব্যবসায়ীদের কোনো হাত নেই।
শনিবার (২০ মার্চ) দুপুরে সরেজমিনে ময়মনসিংহ নগরীর কয়েকটি বাজার ঘুরে এ তথ্য জানা গেছে।
শহরের প্রধান মেছুয়া বাজারের অক্ষয় স্টোরের ব্যবসায়ী অক্ষয় কুমার বলেন, এ বছরই ভোজ্য তেলের দাম সর্বোচ্চ। এর আগে তেলের দাম এতো বেশি কখনই হয়নি।
তিনি বলেন, খোলা সয়াবিন তেল ১৩২ টাকা লিটার। এছাড়া বোতলজাত প্রতি লিটার ১২৪-১৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে হেজবুল্লাহ রোড কাউসার রাইস এন্টারপ্রাইজের মালিক আব্দুস সালাম বলেন, চালের বাজার স্থিতিশীল হলেও ব্যবসায় এখন লোকসান হচ্ছে। রমজানে বাজারে নতুন চাল আসলে দাম আরও কমবে। তবে, চালের দাম গত সপ্তাহের তুলনায় স্থিতিশীল আছে।
তিনি বলেন, প্রতি কেজি নাজিরশাইল ৬০-৬২ টাকা, আঠাশ ৫২ -৫৩, ঊনত্রিশ চাল ৫২-৫৪, ঊণচল্লিশ ৫০-৫১ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
হেজবুল্লাহ রোড আরেক ব্যবসায়ী মের্সাস নিউ বিএল ট্রেড্রাসের মালিক সুশান্ত চক্রবর্তী বলেন, কেউ কেউ এক-দুই টাকা কেজিতে বেশি বিক্রি করছেন। ইরি মোটা চাল ৪৪-৪৬, স্বর্ণা ৪৬-৪৭ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। তবে চলতি সপ্তাহে চালের দাম বাড়েনি বলেও দাবি করেন তিনি।
বাজারের খুচরা কাঁচামাল ব্যবসায়ী মফিজুল ইসলাম বলেন, ঢেঁড়স, পটল, শিম, সাজনা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। ঢেঁড়স প্রতি কেজি ৭০, পটল ৬০, বেগুন ৩৫-৪০, চিচিঙ্গা ৫০, করলা ৪০, লতা ৭০, শিম ৪০, টমেটো ১৫, দেশি কুমড়া ৪০-৪৫, দেশি লাউ প্রতি পিস ২৫-৩০, ছোট আলু ২০, বড় আলু ১৮, ছোট বেগুন ৪০, বরবটি ৮০, শসা ৪০ ও গাঁজর ৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
বাজারের সুরুজ আলীন বলেন, কাচা মরিচ ৫০, হাসের ডিম ৪০, ফার্মের মুরগির ডিম ৩০ টাকা, দেশি মুরগির ডিম ৫০, রসুন বড় ৬০, রসুন ছোট ১২০, শুকনা মরিচ ২৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মেসার্স ইসমাইল এন্টারপ্রাইজ ইসমাইল বলেন, মাসকলাইয়ের ডাল ৯০, দেশি মুসুর টাকা ১১০ হাইব্রিড মসুর ডাল ৭০, খেসারি ৯০, মটর ৪৫, চিনি ৮০, ছোলা ৭০, মুগডাল ১৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে চিনি এ বছর সর্বোচ্চ দামে বিক্রি হচ্ছে।
আসন্ন রোজা উপলক্ষে ছোলা বুট প্রতি কেজি ৬৩ টাকা থেকে ২ টাকা বেড়ে এখন ৬৫ টাকা, খোঁলা আটা কেজি প্রতি ৩০-৩২ টাকা। ময়দা কেজি প্রতি ৪০-৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ওই বাজারের মুড়ির ব্যবসায়ী তপন কুমার পাল বলেন, গত তিন-চার মাস ধরে মুড়ি ৬১-৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে নিম্নমানের খেজুর কেজিতে বিক্রি হচ্ছে ১৪০-১৫০ টাকায়। মাঝারি মানের খেজুর ২৫০-৩০০ টাকা কেজি দরে। আর ভালো মানের খেজুর কেজিতে বিক্রি হচ্ছে ৬০০-৬৫০ টাকা।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, দেশি মুরগির দাম দৌড়াচ্ছে গরুর দিকে। দেশি মুরগি ৪০০-৪৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। অথচ গরুর মাংসের দাম ৬০০ টাকা। দামে পার্থক্য ১০০-১৫০ টাকা। খাসির মাংস ৮০০ টাকা, ব্রয়লার মুরগি ১৪৫ টাকা, কক ৩০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
বিকালে শম্ভুগঞ্জ বাজারে দেখা যায়, মিরর কার্প, রুই, কারফু (মাঝারি) ১৬০-১৭০ টাকা, বড় কারফিও ২৫০-২৬০, ছোট সিলভার কার্প ৮০, টেংরা ৩২০-৩৫০, শিং ৪০০-৪২০, তেলাপিয়া (মাঝারি) ১২০, কাতল (বড়) ৩৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বড় গলদা চিংড়ির দাম ৪০ টাকা বাড়িয়ে ৫৬০ টাকা। তবে, প্রতি কেজি ইলিশ এক হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সূত্র : জাগো নিউজ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন