ঢাকার নবাবগঞ্জের গালিমপুর বাজার ষ্ট্যান্ড এলাকায় সরকারি খাস জমি দখলমুক্ত করেছেন উপজেলা প্রশাসন৷ জায়গাটি দখলমুক্ত করে মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে স্মৃতি ফলক নির্মাণ করা হবে বলে জানান উপজেলা প্রশাসন৷
১৯৭১ সালের ২৪, ২৫ ও ২৬ সেপ্টেম্বর গালিমপুর ইছামতী কলেজের বিপরীতে নদীর পাশে (বর্তমান গালিমপুর বাজার ষ্ট্যান্ড) এলাকায় পাক-হানাদারের সাথে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন মুক্তিযোদ্ধারা৷ দেশকে পাকিস্তানীদের হাত থেকে রক্ষা করতে তারা সংঘবদ্ধ হয়ে পাক-হানাদারদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েন৷ পানি পথে ডুব দিয়ে পাক-হানাদারদের লঞ্চে উঠে তাদের প্রতিরোধ করতে সক্ষম হয় মুক্তিযোদ্ধারা। এই জায়গাটি মুক্তিযুদ্ধের এক অন্যন্য স্মৃতি বিজড়িত হয়ে আছে। এই জায়গাটি স্বাধীনতার পর এপর্যন্ত কোন ধরনের প্রদক্ষেপ নিয়ে দখলমুক্ত করা হয়নি৷
স্বাধীনতার প্রায় ৫০ বছর পর বৃহস্পতিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে উপজেলা প্রশাসন উদ্যোগে উচ্ছেদ অভিযান করা হয়৷ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাজিবুল ইসলামের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনা করা হয়৷ এসময় র্যাব-১১ সদস্যরা, নবাবগঞ্জ থানা পুলিশের সদস্যরা ও উপজেলা প্রকৌশলী সহযোগিতা করেন৷
জানা গেছে, ১৯৭১ সালে গালিমপুর ইছামতী কলেজ সংলগ্ন এই স্থানটিতে লঞ্চে যুদ্ধ সংঘটিত হয়৷ দেশ স্বাধীন হলেও সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে জায়গাটি এপর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি হিসেবে ধরে রাখা হয়নি। এমনকি সরাসরি খাস খতিয়ানের জমি হওয়ায় কিছু মহল তৎকালীন সময় থেকে ইছামতী কলেজের বিপরীতে নদীর পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া জায়গা দখল করে রেখেছিলেন৷ ৪০ টিরও বেশি দোকানপাট স্থাপনা করা হয়েছিল৷ যেসব জায়গায় দোকান নির্মাণ করা হয়েছে সেগুলো রেকর্ডভূক্ত সরকারি খাস সম্পত্তি। এসব অবৈধ দোকানপাট ভেঙে দিয়ে সরকারি সম্পত্তি রক্ষা করলেন উপজেলা প্রশাসন৷
‘মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত সরকারি খাস সম্পত্তি দখলমুক্ত করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং উপজেলা প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানিয়ে একই দিন দুপুরে গালিমপুর বাজার এলাকায় মিছিল করেন মুক্তিযোদ্ধারা৷
এবিষয়ে নবাবগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাজিবুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, দীর্ঘদিন যাবৎ গালিমপুর বাজার ষ্ট্যান্ডের পাশে সরকারি খাস জমি দখল করে রেখেছিলেন একটি মহল। উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে জায়গাটি দখল মুক্ত করা হয়েছে। এই জায়গাটিতে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত রয়েছে৷ দেশকে স্বাধীন করতে ১৯৭১ সালে এখানে পাক-হানাদারদের সাথে মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধ করেছিলেন৷ তাই এখানে মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে স্মৃতি ফলক নির্মাণ করা হবে৷
নির্বাহী মেজিস্ট্রেট আরও জানান, সরকারি খাস জমি যারাই দখলে নিবে তাদেরই উচ্ছেদ করা হবে এমনি ভাবে। এই অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি আমাদের প্রতিনিধি কে ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন