রাজশাহীর তানোর উপজেলায় গির্জায় তিন দিন এক কিশোরীকে (১৫) আটকে রেখে ধর্ষণের ঘটনায় সেখানকার ফাদার প্রদীপ গ্যাগরীকে (৫০) গত মঙ্গলবার রাতে রাজশাহী নগরীর আমচত্বর সংলগ্ন বিশপ হাউজ থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। এর আগে তানোর থানায় তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা দায়ের হয়।র্যাব-৫ এর রাজশাহীর কোম্পানি অধিনায়ক এটিএম মাইনুল ইসলাম জানান, ধর্ষণের খবর জানতে পারার পর থেকেই পলাতক প্রদীপ গ্যাগরীকে আটকের জন্য তারা প্রচেষ্টা শুরু করেন। পরে রাতেই তাকে বিশপ হাউজ থেকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর তাকে তানোর থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।
তানোর উপজেলার মুন্ডুুমালা মাহালীপাড়া এলাকার সাধুজন মেরী ভিয়ান্নী গির্জার ফাদার প্রদীপ। ওই কিশোরী গত শনিবার সকালে গির্জার পাশে ঘাস কাটতে গিয়ে নিখোঁজ হয়। অনেক খোঁজাখুঁজির পর তাকে না পেয়ে পরদিন রোববার থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তার ভাই। এরপর গত সোমবার দুপুরের পর জানা যায়, নিখোঁজ কিশোরী গির্জার ফাদার প্রদীপের ঘরে বন্দি অবস্থায় আছে। পরে কিশোরীর পরিবারের সদস্য এবং এলাকার লোকজন ওই কিশোরীকে উদ্ধার করেন। এরপর সন্ধ্যায় গির্জার ভেতরেই শালিসি বৈঠক বসে।
সেখানে দোষ প্রমাণিত হওয়ায় ফাদার প্রদীপকে অপসারণ করার সিদ্ধান্ত হয়। আর ভুক্তভোগী ওই কিশোরীকে পরিবারের কাছে না দিয়ে গির্জার ভেতরে সিস্টারদের কাছেই রাখা হয়। তখন বলা হয়, ওই কিশোরীর পরিবারের সদস্যরা থানা থেকে নিখোঁজের জিডি প্রত্যাহার করে নিলে তাকে পরিবারের কাছে পাঠানো হবে। এছাড়া সাবালিকা হওয়া পর্যন্ত ওই কিশোরীর খরচ বহন করবে গির্জা কর্তৃপক্ষ।
গত মঙ্গলবার দুপুরে ওই কিশোরীর ভাই থানায় গিয়ে জানান তার বোনকে পাওয়া গেছে। কিন্তু তারপরও ওই কিশোরীকে পরিবারের কাছে দেয়া হয়নি। গির্জার প্রধান ফাদার প্যাট্রিক গমেজ ও শালিসি বৈঠকের প্রধান কামেল মার্ডি তাকে আটকে রেখেছিলেন। খবর পেয়ে সন্ধ্যায় তানোর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাকিবুল হাসান ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সুশান্ত কুমার মাহাতো গির্জা থেকে ওই কিশোরীকে উদ্ধার করেন। এ ঘটনায় রাতে থানায় একটি ধর্ষণের মামলা করেন ওই কিশোরী ভাই।
ওসি রাকিবুল হাসান জানান, শারীরিক পরীক্ষার জন্য ওই কিশোরীকে গতকাল বুধবার সকালে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) পাঠানো হয়েছে। গ্রেফতার ফাদার প্রদীপকেও আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন