নিজস্ব প্রতিনিধি:
ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলায় সরকারি নীতিমালার তোয়াক্কা না করে মাধ্যমিক স্কুলেগুলোতে চলছে ভর্তি বাণিজ্য ও আদায় করা হচ্ছে অগ্রীম সেশন ফি। আর এই তালিকায় এগিয়ে রয়েছে নবাবগঞ্জ পাইলট উচ্চ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়সহ উপজেলা সদর এলাকায় অবস্থিত বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
অধিকাংশ অভিভাবকদের অভিযোগ, করোনা ভাইরাস নামক মহামারীতে বিদ্যালয়গুলো বন্ধ থাকলেও স্কুল পরিচালনা পর্ষদ ও প্রধান শিক্ষকদের যৌথ উদ্যোগে উন্নয়ন ফি'র নামে আদায় করা হচ্ছে বাড়তি টাকা যা সেশন ফি হিসেবে অগ্রিম নেওয়া হচ্ছে। এ অবস্থায় তাদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছেন অভিভাবকরা। আর স্কুলগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রমাণের অপেক্ষায় সময় পাড় করছেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা দফতরের কর্মকর্তা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলা সদর এলাকার কাশিমপুর এলাকার বাসিন্দা এক বীর মুক্তিযোদ্ধা বলেন
এমপিওভুক্ত উপজেলা সদরে অবস্থিত নবাবগঞ্জ পাইলট উচ্চ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণীতে শিক্ষার্থীদের ভর্তি বাবদ ২ হাজার টাকা ও শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ভর্তিবাবদ নেয়া হচ্ছে ২৫শ টাকা। যেখানে সরকারি নীতিমালার তোয়াক্কা না করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি প্রতি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে সরকার নির্ধারিত ফি'র বাইরে অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। তিনি বলেন সন্তানকে ভালো মানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করাতে এক প্রকার নিরুপায় হয়েই অভিভাবকরাও এ ভর্তি বাণিজ্যের জিম্মি হচ্ছেন। যা কেউ দেখার নেই।
সরেজমিনে উপজেলা সদর এলাকায় অবস্থিত বেশ কিছু স্কুল ঘুরে দেখা যায় একই অবস্থা। বাগমারা এলাকার সালমা আক্তার নামে একজন অভিভাবক বলেন, প্রতিবাদ করলে পরে বাচ্চার সাথে শিক্ষকরা খারাপ ব্যবহার করেন এর ফলে আমার মেয়ে স্কুলে থাকবে কি না তারই তো গ্যারান্টি নাই।'
এদিকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এ অসৎ বাণিজ্য বন্ধ করতে তৎপর রয়েছেন বলে জানান, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সিদ্দিকি নুর আলম তিনি বলেন,'কোন মাধ্যম থেকে যদি আমাদের কাছে অভিযোগ আসে শিক্ষা প্রতিষ্টানের বিরুদ্ধে, আমরা তখনই তা খতিয়ে দেখি। কিন্তু সমস্যা হয়ে যাচ্ছে, অভিযোগ প্রমাণ করার জন্য যে কাগজপত্র দরকার তা অনেকাংশেই আমরা পাই না।'
নবাবগঞ্জে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৪০ এর অধিক। দিনকে দিন অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বাণিজ্যিকভাবে তাদের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করায় গরিব ও মেধাবী শিক্ষার্থীরা অনেকটা পিছিয়ে যাচ্ছে। তাই সচেতন মহল ও অভিভাবকদের মনে প্রশ্ন তৈরী হচ্ছে অর্থেও বিণিময়ে শিক্ষাগ্রহণের প্রতিযোগীতায় কি তাহলে গুণগত শিক্ষা অর্জন অসম্ভব হয়ে পড়বে।
স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, তারা সরকার নির্ধারিত ফি'ই নিচ্ছেন। বাকি টাকা স্কুল উন্নয়ন এবং শিক্ষার্থীদের আনুষঙ্গিক অন্যান্য খরচ বাবদ নেয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে নবাবগঞ্জ পাইলট উচ্চ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় নামক প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ মো. সাইদুর রহমান বলেন, আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তি হওয়ায় কমিটি থেকে অতিরিক্ত পার্টটাইম শিক্ষক নেওয়া হয়েছে। তাদের বেতন-ভাতা দিতে হয়। অনান্য অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে জানান তিনি।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন